গ্যাংরিন (Gangrene) রোগের কারণ, লক্ষণ ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা 
—
গ্যাংরিন কী?গ্যাংরিন হলো শরীরের কোনো অংশে (বিশেষত হাত-পা, আঙুল, ত্বক) রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে কোষ-মৃত্যু ও টিস্যু পচে যাওয়া।
সাধারণত এটি ডায়াবেটিস, আঘাত, বা রক্তনালীর অবরোধ থেকে হয়।—
গ্যাংরিনের প্রধান কারণ
রক্ত চলাচলের ঘাটতি — রক্তনালীর ব্লক বা সংকোচন হলে টিস্যুতে অক্সিজেন পৌঁছায় না।
সংক্রমণ (Infection) — ব্যাকটেরিয়া আক্রমণের ফলে ত্বক বা মাংসপেশি পচে যায়।
ডায়াবেটিস — রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোজ রক্তনালী ক্ষতি করে।
গুরুতর আঘাত বা পোড়া ক্ষত — ইনফেকশন ও টিস্যু ক্ষতির কারণে।
ধূমপান ও অ্যালকোহল — রক্তনালী সংকুচিত করে ও রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত করে।—
লক্ষণ ও উপসর্গ
ত্বকের রঙ পরিবর্তন (নীলচে, কালচে, বা সবুজচে)
ক্ষতস্থানে ব্যথা, পরে অনুভূতিহীনতা
দুর্গন্ধযুক্ত নির্গমন
ক্ষত শুকিয়ে কালচে হয়ে যাওয়া (Dry Gangrene)
পুঁজ ও ফোস্কা হওয়া (Wet Gangrene)
জ্বর, দুর্বলতা, ও শরীরে ব্যথা—
গ্যাংরিনের ধরন Dry Gangrene – রক্ত চলাচল বন্ধ, কিন্তু সংক্রমণ নেই। Wet Gangrene – ইনফেকশনসহ টিস্যু পচে যায়। Gas Gangrene – ব্যাকটেরিয়া (Clostridium) দ্বারা গ্যাস তৈরি হয়ে টিস্যু ফেটে যায়।—
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা (রোগের প্রকৃতি ও অবস্থার উপর নির্ভর করে ওষুধ নির্বাচন করতে হয়। নিচে সাধারণ নির্দেশনা দেওয়া হলো)
১️⃣ Secale Cor 30 / 200 শুকনো গ্যাংরিনে (Dry gangrene) সবচেয়ে কার্যকর।
ত্বক ঠান্ডা, কালচে, ব্যথা কম, কিন্তু জ্বালাপোড়া বেশি। ক্ষত শুকিয়ে পচে যায়। ২️⃣ Arsenicum Album 30 / 200 জ্বালাপোড়া, পচন ও দুর্গন্ধযুক্ত ক্ষত।
রাতে ব্যথা বাড়ে, ভয়ে অস্থির থাকে। ভিজা গ্যাংরিনে উপকারী। ৩️⃣ Carbo Veg 30 / 200
দেহে রক্তসঞ্চালন দুর্বল, ঠান্ডা ত্বক, নীলচে ভাব।
রোগী দুর্বল, নিস্তেজ ও ঘামাচ্ছে। ৪️⃣ Anthracinum 30
ইনফেকশনজনিত গ্যাংরিনে চমৎকার কাজ করে।
ক্ষত থেকে দুর্গন্ধযুক্ত পুঁজ বের হয়। ৫️⃣ Lachesis 200
ত্বক কালচে বা বেগুনি রঙের, ব্যথা ও ফুলে যাওয়া। ক্ষত ছুঁলেই ব্যথা বেড়ে যায়। ৬️⃣ Silicea 30 / 200 ক্ষত শুকিয়ে নতুন টিস্যু গজাতে সাহায্য করে।
দেহের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে।—
সহায়ক যত্ন
ক্ষত পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন
ধূমপান ও অ্যালকোহল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করুন
পুষ্টিকর খাদ্য (প্রোটিন ও ভিটামিন C/E সমৃদ্ধ) গ্রহণ করুন
ডায়াবেটিস থাকলে রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখুন
“হোমিওপ্যাথি – প্রকৃতির কোমল স্পর্শে সুস্থতার সঠিক দিশা।” 
