সর্বশেষঃ

নারীদের স্তন ক্যান্সার থেকে বাঁচতে ৭টি উপায় : | শীতে নাক বন্ধ, চোখ চুলকায়? সাধারণ সর্দি নয়, হতে পারে অ্যালার্জিক রাইনাইটিস | বছরে হৃদরোগ নিয়ে জন্মায় ৭৩ হাজার শিশু, পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজিস্ট মাত্র ৫৩ | পা ও পায়ের পাতায় যে ৫টি লক্ষণ দেখা দিলে বুঝবেন আপনার কিডনি বিপদে! | কিডনির সমস্যায় শরীরে দেখা দেয় যেসব লক্ষণ | নারীদের স্তন ক্যান্সার থেকে বাঁচতে ৭টি উপায় : | শীতে নাক বন্ধ, চোখ চুলকায়? সাধারণ সর্দি নয়, হতে পারে অ্যালার্জিক রাইনাইটিস | বছরে হৃদরোগ নিয়ে জন্মায় ৭৩ হাজার শিশু, পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজিস্ট মাত্র ৫৩ | পা ও পায়ের পাতায় যে ৫টি লক্ষণ দেখা দিলে বুঝবেন আপনার কিডনি বিপদে! | কিডনির সমস্যায় শরীরে দেখা দেয় যেসব লক্ষণ |
মানসিক রোগে ওষুধ
মানসিক রোগে ওষুধ

মানসিক রোগের উপসর্গগুলোকে জিন-ভূতের আছর, জাদু-টোনা-তাবিজ-আলগা বাতাসের প্রভাব বলে বিশ্বাস করে অনেকে। চিকিৎসাও করানো হয় তেলপড়া, পানিপড়া, তাবিজ, ঝাড়ফুঁক, ‘শিকল থেরাপি ইত্যাদির মাধ্যমে। অনেকের কাছে মানসিক রোগের উপসর্গগুলো বয়সের দোষ, বিয়ের জন্য টালবাহানা, ঢং বা ভং ধরা। এত সব কুসংস্কার ও অজ্ঞতার বাধা ডিঙিয়ে যারা চিকিৎসার আওতায় আসে, তাদেরও বড় একটি অংশ ওষুধ নিয়ে নানা বিভ্রান্তিতে সঠিক চিকিৎসা করায় না। এ নিয়ে লিখেছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকার মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মুনতাসীর মারুফ।

মানসিক রোগের ওষুধের ক্ষেত্রে একটি ভ্রান্ত ধারণা হচ্ছে যে এগুলো খেলে ব্রেনের ক্ষতি হয়, ব্রেন নষ্ট হয়ে যায়, মস্তিষ্ক আর কখনোই স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে না ইত্যাদি। যেকোনো রোগের চিকিৎসায় নতুন কোনো ওষুধ আবিষ্কৃত হলে নির্ধারিত বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে মানবদেহে এটি কতটা কার্যকর ও নিরাপদ, তা পরীক্ষা করার পরই কেবল বাজারজাতকরণের অনুমতি দেওয়া হয়। অন্য যেকোনো ওষুধের মতো মানসিক রোগ চিকিৎসার ওষুধগুলোও নির্ধারিত গবেষণায় সন্তোষজনক ফলাফলের পরই ব্যবহারের জন্য অনুমতিপ্রাপ্ত হয়েছে।

তবে এ কথা বলা হচ্ছে না যে মানসিক রোগের ওষুধের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। আবিষ্কৃত কোনো কার্যকর ওষুধই শতভাগ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত নয়। এমনকি আমরা নিয়মিতই যে প্যারাসিটামল আর গ্যাসের ওষুধ (অ্যান্টিআলসারেন্ট) সেবন করি, সেগুলোও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াবিহীন নয়। মনে রাখতে হবে, একটি ওষুধে সবার ক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় না। কোনো কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নগণ্যসংখ্যকের হতে পারে। কিছু সাধারণ, সহনীয় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে অনেক সেবনকারীর। কিন্তু এই সব প্রতিক্রিয়ার তুলনায় ওষুধের কার্যকর প্রভাব বেশি হওয়ায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কাটুকু চিকিৎসাবিজ্ঞানে ‘গ্রহণযোগ্য’ বলেই ধরা হয়। মানসিক রোগের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কেও একই কথা প্রযোজ্য। কিন্তু সাধারণভাবে মানসিক রোগ ও এর ওষুধ সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি নেতিবাচক হওয়ায় না জেনেই অনেকে এসব ওষুধ সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করে থাকে।

মানসিক রোগের ওষুধ দীর্ঘমেয়াদে সেবনের উপদেশ মেনে চলতে দ্বিধাবোধ করে অনেকে। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, মৃগীরোগ, বাতজ্বর প্রভৃতির ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদে ওষুধ সেবন করতে হয়। তথ্য সরবরাহ এবং প্রচারণার কারণে রোগীরা এখন এসব রোগে দীর্ঘমেয়াদি ওষুধের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকে। কিন্তু মানসিক রোগের ওষুধের ব্যাপারে সমাজের সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গি এখনো নেতিবাচক। কিছুদিন ওষুধ সেবনের পর যখন উপসর্গ কমে যায়, তখন রোগী বা তার আত্মীয়স্বজন চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ বন্ধ করে দেয়। ফলে চিকিৎসা সঠিক হয় না এবং কিছুদিন পর রোগ ফিরে আসে।

অনেকে আবার ওষুধ ছাড়া শুধু সাইকোথেরাপি অথবা কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ করে দেওয়ার দাবি জানায়। মানসিক রোগের ধরন অনুযায়ী ওষুধ, সাইকোথেরাপি ও অন্যান্য চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে। কোন রোগের জন্য কোন ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন এর গবেষণাভিত্তিক দিকনির্দেশনাও রয়েছে। কিছু রোগের চিকিৎসায় যেমন সাইকোথেরাপিই প্রথম পছন্দ, আবার কিছু রোগে ওষুধ অপরিহার্য। রোগীর রোগ নির্ণয় করে তার কোন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে, মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞই কেবল সে পরামর্শ দেবেন। মনে রাখতে হবে, ওষুধ সেবন শুরু করতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে, বন্ধও করতে হবে তাঁর পরামর্শমতো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *