সর্বশেষঃ

নারীদের স্তন ক্যান্সার থেকে বাঁচতে ৭টি উপায় : | শীতে নাক বন্ধ, চোখ চুলকায়? সাধারণ সর্দি নয়, হতে পারে অ্যালার্জিক রাইনাইটিস | বছরে হৃদরোগ নিয়ে জন্মায় ৭৩ হাজার শিশু, পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজিস্ট মাত্র ৫৩ | পা ও পায়ের পাতায় যে ৫টি লক্ষণ দেখা দিলে বুঝবেন আপনার কিডনি বিপদে! | কিডনির সমস্যায় শরীরে দেখা দেয় যেসব লক্ষণ | নারীদের স্তন ক্যান্সার থেকে বাঁচতে ৭টি উপায় : | শীতে নাক বন্ধ, চোখ চুলকায়? সাধারণ সর্দি নয়, হতে পারে অ্যালার্জিক রাইনাইটিস | বছরে হৃদরোগ নিয়ে জন্মায় ৭৩ হাজার শিশু, পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজিস্ট মাত্র ৫৩ | পা ও পায়ের পাতায় যে ৫টি লক্ষণ দেখা দিলে বুঝবেন আপনার কিডনি বিপদে! | কিডনির সমস্যায় শরীরে দেখা দেয় যেসব লক্ষণ |

♦প্রশ্নঃ♦হিন্দুদের হাতে তৈরী জিলাপী দিয়ে মিলাদ পড়ানো বা খাওয়া সম্পর্কে হানাফি মাযহাবে কি বলে?
♥♥♥♥
আপনার প্রশ্নটি খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং বাস্তব জীবনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। ইসলামিক শরিয়াহ বিশেষ করে হানাফি মাযহাব অনুযায়ী, হিন্দুদের তৈরি খাবার (যেমন জিলাপি) দিয়ে মিলাদ পড়ানো বা খাওয়ার ব্যাপারে নিচের মতো বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া যায়:
🧭 হানাফি মাযহাবের মূলনীতি:
হানাফি মাযহাবে খাবারের ব্যাপারে তিনটি বিষয় বিবেচ্য:
✅ ১. খাদ্য যদি হালাল হয় (উপাদান ও উৎস)
➡️ অর্থাৎ খাদ্যে:
কোনো হারাম উপাদান (যেমন: শুকরের চর্বি, মদ, হারাম তেল) নেই,
প্রসাদ বা পূজার উৎসর্গকৃত নয়,
এবং পরিচ্ছন্নভাবে তৈরি —
👉 তাহলে অমুসলিম (যেমন হিন্দু) তৈরি করলেও তা খাওয়া জায়েজ (অনুমোদিত)।
❌ ২. যদি খাবার ‘প্রসাদ’ হয় বা পূজার অংশ হয়
➡️ অর্থাৎ যদি জিলাপি কোনো মূর্তি বা দেবতার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করে আনা হয় (যেমন পূজার প্রসাদ),
👉 তাহলে তা খাওয়া হারাম — এটা শিরকি আমলের অংশ।
✅ ৩. খাবার গ্রহণের সময় মুসলমান নিজে বিসমিল্লাহ বলবে
➡️ এমনকি অমুসলিমের তৈরি হলেও, মুসলিম যখন খাবেন, তিনি যদি “বিসমিল্লাহ” বলে খাবার শুরু করেন, তাহলে খাবার খেতে কোনো সমস্যা নেই, যদি তা হালাল হয়।
📘 হানাফি ফিকহের দৃষ্টিভঙ্গি:
হানাফি মাযহাবের ফকীহরা বলেন:
“যদি অমুসলিম এমন কোনো খাবার দেয় যাতে হালাল উপাদান ব্যবহৃত হয়েছে এবং তা কোনো শিরকি উৎসর্গ নয়, তাহলে তা গ্রহণে বাধা নেই।”
— ফাতাওয়া আলমগীরি (হানাফি ফিকহ সংকলন)
📌 মিলাদে জিলাপি খাওয়ার প্রসঙ্গ:
➤ যদি হিন্দুর তৈরি জিলাপি হালাল ও পরিষ্কার হয়, এবং প্রসাদ না হয়:
তখন মিলাদে ব্যবহার করা, বিতরণ করা, খাওয়া — জায়েজ।
❌ কিন্তু যদি:
জিলাপি প্রসাদ হিসেবে আনা হয়, বা
অপবিত্র পরিবেশে তৈরি হয়, বা
এতে হারাম কিছু থাকে,
➡️ তাহলে তা দিয়ে মিলাদ পড়ানো, খাওয়ানো বা খাওয়াও নাজায়েজ হবে।
✅ সংক্ষিপ্ত সারাংশ (হানাফি মতে):
অবস্থাহুকুমহিন্দুর তৈরি জিলাপি, হালাল উপাদানে, প্রসাদ নয়✔️ জায়েজহিন্দুর তৈরি জিলাপি, পূজার প্রসাদ❌ হারামসন্দেহ আছে প্রসাদ কিনা❌ বর্জন উত্তম (احتياط)পরিষ্কারভাবে হালাল ও পবিত্র, মুসলিম বিসমিল্লাহ বলে খাচ্ছে✔️ জায়েজ
🧠 উপদেশ:
আপনি যদি নিশ্চিত হন যে জিলাপি সাধারণ বাণিজ্যিকভাবে তৈরি,
প্রসাদ নয় এবং হালাল উপাদানে তৈরি,
তাহলে হানাফি মাযহাবে সেই জিলাপি মিলাদে ব্যবহার ও খাওয়া বৈধ।
♦♦ প্রশ্নঃ
হিন্দুদের হাতে তৈরি জিলাপি বা অন্যান্য খাবার খাওয়া সম্পর্কে ইসলামি স্কলারদের ফতোয়া ও মতামত নিচে হানাফি মাজহাবসহ বিশিষ্ট ফকীহদের বক্তব্য অনুসারে উপস্থাপন করা হলো:
♦♦🔹 মূল প্রশ্ন:
হিন্দুদের হাতে তৈরি জিলাপি, যা হালাল উপাদানে তৈরি ও প্রসাদ নয় — তা কি মুসলমান খেতে পারবে?
✅ ইসলামি স্কলারদের মতামত ও ফতোয়া:
1. ✦ দারুল উলূম দেওবন্দ (ভারত) – হানাফি মাজহাব ভিত্তিক
🔸 ফতোয়া নম্বর: 659/659/M=1432
♦♦প্রশ্ন: অমুসলিম (যেমন হিন্দু) যদি মুসলিমকে হালাল খাবার দেয়, সেটা কি খাওয়া যাবে?
📘 উত্তর (সংক্ষেপ):
যদি খাবার হালাল উপাদানে তৈরি হয়, কোনো অপবিত্রতা না থাকে, এবং তা কোনো দেবতা বা মূর্তির নামে উৎসর্গ না করা হয়, তাহলে তা খাওয়া জায়েজ।
➤ তবে সন্দেহজনক কিছু থাকলে পরিহার করা উত্তম।
🔹 সূত্র: Darul Ifta Deoband
2. ✦ মুফতি তাকী উসমানী (পাকিস্তান) – আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য ফকীহ
“অমুসলিম যদি খাবার তৈরি করে এবং তাতে হালাল উপাদান থাকে, তাহলে তা খাওয়া জায়েজ, যদি না তা কোনো ধর্মীয় উৎসর্গ বা শিরকি কার্যক্রমের অংশ হয়।”
📘 মূলনীতি:
খাবারের হালালতা নির্ভর করে তার উপাদান, প্রস্তুত প্রণালি এবং উৎসের উপর, কে রান্না করেছে — সেটি মূল বিবেচ্য নয়, যতক্ষণ না তা শিরক বা নাপাকির সাথে যুক্ত।
3. ✦ ইসলামিক ফিকহ কাউন্সিল (মক্কা ভিত্তিক)
📘 ফতোয়া:
“যদি খাবার হালাল উপায়ে প্রস্তুত হয় এবং তা কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা দেবতার নামে উৎসর্গ না হয়, তাহলে অমুসলিমের তৈরি খাবার খাওয়া জায়েজ।”
❌ যেসব ক্ষেত্রে খাওয়া হারাম হবে:
অবস্থাহুকুমব্যাখ্যাজিলাপি “প্রসাদ” হিসেবে উৎসর্গিত❌ হারামশিরক ও ইবাদতের অংশহারাম উপাদান (শুকরের চর্বি, মদ ইত্যাদি) থাকলে❌ হারামকুরআনে হারাম ঘোষিতঅপবিত্র পরিবেশ বা পাত্রে তৈরি❌ অপছন্দনীয় / মাকরূহপরিচ্ছন্নতা ইসলামে গুরুত্বপূর্ণসন্দেহজনক উৎস (প্রসাদ কিনা নিশ্চিত না)❌ বর্জন উত্তমإحتياط (সতর্কতা) অবলম্বন করা
✅ উপসংহার (ফতোয়ার সারমর্ম):
প্রশ্নউত্তর (ফতোয়া)হিন্দুর তৈরি, হালাল উপাদানে, প্রসাদ নয় এমন জিলাপি খাওয়া✔️ জায়েজ (হালাল)যদি সেটা পূজার প্রসাদ হয়❌ হারামযদি হালাল/হারাম সন্দেহ হয়❌ পরিহার করা উত্তম
📌 আপনার জন্য পরামর্শ:
আপনি যদি জানেন জিলাপিটি দোকান থেকে কেনা, বাণিজ্যিকভাবে তৈরি, প্রসাদ নয়, তাহলে খাওয়া জায়েজ।
খাওয়ার সময় নিজে “বিসমিল্লাহ” বলে খাওয়াই মূলত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রসাদ, পূজা, নাপাকি, হারাম উপাদান — এসব থাকলে অবশ্যই বর্জন করুন।
🤲 আল্লাহ আমাদেরকে হালাল ও পবিত্র জীবিকা ও খাদ্য গ্রহণ করার তাওফিক দিন, এবং শিরক ও সন্দেহজনক বিষয় থেকে হেফাজত করুন।
আমিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *